রংপুর চেম্বারে দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে শুল্ক সংক্রান্ত সহায়তা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার অনুষ্ঠিত
দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং শিল্পায়নের মাধ্যমে আমদানি পণ্যের নির্ভরশীলতা হ্রাস ও রপ্তানি বাড়াতে ব্যবসা বান্ধব নানাবিধ নীতি সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান  রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু। ১৪ জানুয়ারি ২০২০ইং তারিখ আরসিসিআই বোর্ড রুমে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন ও রংপুর চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র যৌথ উদ্যোগে  আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। 
দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের ভূমিকা এবং শুল্ক সংক্রান্ত সহায়তা এবং সচেতনতা  বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রংপুর চেম্বার বোর্ড রুমে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সরকারের সচিব) তপন কান্তি ঘোষ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিনারেট এর কমিশনার শওকত আলী সাদী, রংপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ আসিব আহসান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ মোঃ আবু রায়হান আলবেরুনী এবং মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ট্যারিফ কমিশনের সহকারি প্রধান মোঃ মাহমুদুল হাসান এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন রংপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজতোবা হোসেন রিপন।
উন্মুক্ত আলোচনায় কর ও শুল্ক সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রংপুর চেম্বারের পরিচালক মোঃ মোতাহার হোসেন মন্ডল মওলা, প্রণয় বণিক, বিশিষ্ট আমদানি ও রপ্তানিকারক মোঃ মগরব আলী, আলহাজ¦ ময়েন উদ্দিন ও মোঃ শাহজাহান আলী।
সেমিনারে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সরকারের সচিব) তপন কান্তি ঘোষ বলেন, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষা করে অর্থনীতিকে সমৃৃদ্ধশালী করতে ট্যারিফ কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে চলছে। কৃষির পাশাপাশি শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়ে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদেরকে রংপুরের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন,  ভারত আমাদের ২৫টি পণ্য বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও কিছু কিছু নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ারের জন্য এ সুবিধা আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। ট্যারিফ কমিশন এমন কিছু করবে না যাতে দেশীয় শিল্পের ক্ষতি হয়।  দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই। পণ্যের ন্যায্য দাম নির্ধারণে ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় যা প্রয়োজন সব করা হবে। এছাড়া তিনি  বলেন, এন্টিডাম্পিং, কাউন্টারভেইলিং ও সেইফগার্ড মেজার্স এবং দেশীয় উৎপাদিত পণ্যের স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে বিপণনের সুযোগ সৃষ্টি করা ট্যারিফ কমিশনের অন্যতম দায়িত্ব। জাতীয় স্বার্থে উৎপাদিত, আমদানি এবং রপ্তানি পণ্যের উপর করারোপ অথবা অব্যাহতির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদেরকে মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ ট্যারিফ কমিশনের নিকট পাঠানোর অনুরোধ জানান। 
সভাপতির বক্তব্যে রংপুর চেম্বারের সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, দেশি উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি শিল্পায়নের মাধ্যমে আমদানি পণ্যের নির্ভরশীলতা হ্রাস ও রপ্তানি বাড়াতে ট্যারিফ কমিশনকে  জোড়ালোভাবে কাজ করার তাগিদ দেন। এছাড়া তিনি অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রংপুর বিভাগে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে আলাদা শিল্পনীতি, ঋণনীতি, কর ও ভ্যাট নীতি, ট্যাক্স হলিডের মেয়াদ বৃদ্ধিসহ শুল্ক সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতি সহায়তা প্রদানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান।
উক্ত দিনব্যাপী বিনিময় সভা ও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন রংপুর চেম্বারের কর্মকর্তা ও পরিচালকবৃন্দ, চেম্বারের সাবেক কর্মকর্তা ও পরিচালকবৃন্দ, বিশিষ্ট শিল্পপতি, আমদানি-রপ্তানিকারকবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।